নারী হোক বা পুরুষ নিজেকে যাতে একটু
সন্দর লাগে এই বিষয় নিয়ে আমরা সবাই ভাবি। চুল আমাদের সৌন্দর্য্য একটা বিশেষ দিক।
যে কোন মানুষের নজর আগে পড়ে চুলের দিকে। তাই আমরা সবাই চুলের যত্ন নিতে কোন কমতি
রাখি না। আমরা আমাদের চুলের যত্নে অনেক দামী দামী প্রোডাক্ট ব্যাবহার করে থাকি।
সবার দারা কিন্তু আবার তা সম্ভব হয় না। তাই আসুন দেখি হাতের নাগালে কিছু জিনিস যা
আমাদের কাজে লাগতে পারে।
সৌন্দর্য বর্ধনকারী এই প্রকৃতিকন্যার
নামটি হলো ঘৃত কুমারী। লাতিন
ভাষায় একে বলে
অ্যালোভেরা। বাংলায়
ঘৃতকুমারী হিসেবে পরিচিত। ঔষধি
গুণের জন্য কণ্টকধারী
সবুজ এই ছোট উদ্ভিদের বেশ কদর রয়েছে। আমরা যত খাদ্য গ্রহণ করি, তার মিনারেল এবং
ভিটামিন প্রথমে কাজে লাগায় আমাদের শরীরের ভাইটাল অর্গানগুলো, তারপর হেয়ার ফলিকল
এবং নখ বাদে বাকি নিউট্রিয়েন্ট গ্রহণ করে। তাহলে
বুঝতেই পারছেন, পুষ্টি
চুলের গোড়ায় অনেক পরে গিয়ে পেঁৗছে। তাই যথেষ্ট পরিমাণে আমাদের
প্রোটিন, কমপ্লেক্স
কার্বোহাইড্রেট, স্বাস্থ্যকর
ফ্যাট, মিনারেল
এবং ভিটামিন গ্রহণ করা খুব জরুরি। অ্যালোভেরা একদিকে যেমন বাড়ায় বাইরের সৌন্দর্য, অন্যদিকে ভেষজ এই
উদ্ভিদের রয়েছে পুষ্টিগুণও। অ্যালোভেরায়
রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিফ্লামেটরি, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়া
ও অ্যালোমিনের মতো ঔষধি গুণ। এসব গুণ আমাদের শরীর, ত্বক ও চুলের জন্য
অনেক উপকারী। চুল
ও ত্বকের সৌন্দর্যে চুল ভালো রাখতে
অ্যালোভেরার রস খাওয়া ও ব্যবহার করা দুটিই উপকারী। চুলের জন্য নিয়মিত অ্যালোভেরার শরবত
খাওয়া চুলের জন্য ভালো। এতে
চুল পড়া অনেক কমে যায়। খুশকি কমাতেও এটি সহায়ক। অ্যালোভেরায় আছে
অ্যালোমিন নামক উপাদান, যেটি
চুল লম্বা করতে
সাহায্য করে। কিশোর
বয়স থেকে স্বাভাবিক সুস্থ সবাই অ্যালোভেরার নির্যাস খেতে পারেন। কিছু জুসের কথা বলব
যেগুলো আপনার চুলে পুষ্টি জোগাবে। জুস
আকারে যে কোনো জিনিস আমাদের শরীর খুব তাড়াতাড়ি শোষণ করে, তাই ফলও খুব দ্রুত উপভোগ করা যায়।
১. আমরা সবাই চুলের যত্নে আমলকীর গুঁড়া লাগিয়ে থাকি। তবে ৪-৫ টুকরো কাঁচা
আমলকী চিবিয়ে খেলেও চুল পড়া অনেকাংশে রোধ হবে। আমলকীতে
আছে প্রচুর আয়রন, যা
নতুন চুল গজাতে যেমন সাহায্য করে, তেমনি সাহায্য করে চুল পড়া
রোধেও।
২. গাজরে থাকে ভিটামিন 'এ', যা মাথার স্কাল্পকে স্বাস্থ্যকর
রাখে। চুলকে
উজ্জ্বল করে তোলে। স্বাস্থ্যকর
সেবাম উৎপন্নের
মাধ্যমে গাজর দ্রুত চুল গজাতে সাহায্য করে। দুটি খোসা ছাড়ানো গাজর টুকরো করে কেটে নিন। এর সঙ্গে আধা কাপ টক
বা মিষ্টি দই নিন। টক
দইয়ের সঙ্গে
অল্প কাঁচামরিচ আর লবণ যোগ করবেন। এবার ভালো করে ব্লেন্ড করে প্রতিদিন সকালের
নাশতার সঙ্গে পান করুন মজাদার এই গাজরের জুস।
৩. টমেটোয় আছে
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা
মাথার স্কাল্পের রক্ত সঞ্চালন ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। এই ফ্লোয়ের কারণে
চুলের ফলিকল স্টিমুলেট হয় আর ঘুমন্ত চুলের গোড়াকে জাগিয়ে তোলে। একটি পাকা টমেটো
টুকরো করে কেটে নিন। এর
সঙ্গে অল্প ধনেপাতা, অল্প
কাঁচামরিচ ও লবণ দিয়ে ব্লেন্ড করে তৈরি করুন সুস্বাদু টমেটো শরবত।
৪. পালংশাক
চুলের বৃদ্ধির জন্য অনেক উপকারী। কেননা এতে আছে ভিটামিন এ, সি এবং প্রচুর পরিমাণে
প্রোটিন। এই
নিউট্রিয়েন্টগুলো চুলের স্কাল্পে তেল উৎপন্ন করে, যা চুলের গ্রোথ
বাড়িয়ে দেয় হাজার গুণে। ভিটামিন
এ এবং সি'র
অভাবে চুলের
গ্রোথ যেমন ব্যাহত হয়, তেমনি
ব্যাহত হয় স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুল। এতে আছে ক্যালসিয়াম এবং
আয়রন।
৫. অ্যালোভেরায় থাকা অ্যামাইনো এসিড, প্রোটিন, মিনারেল এবং ভিটামিন
এ, সি, ই ড্যামেজড চুলের
জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। এমনকি নতুন চুল
গজাতে এর ভূমিকাও অসীম। একটি
অ্যালোভেরা পাতা নিন। এর জেল চামচ দিয়ে
বের করে আনুন। এক
গ্গ্নাস পানির সঙ্গে একটু বিট লবণ, কাঁচামরিচ
মিশিয়ে ব্লেন্ড করতে পারেন, আবার
চামচ দিয়ে ভালো করে নেড়ে পানির সঙ্গে
মিশিয়েও নিতে পারেন। পান
করুন আর হয়ে গেল আপনার চুলের সম্পূর্ণ
ট্রিটমেন্ট।
৬. শসায় আছে যথেষ্ট পরিমাণে সিলিকা, সালফার এবং ভিটামিন 'এ'। এই উপাদানগুলো চুলের গ্রোথ এবং চুলপড়া
প্রতিরোধের জন্য অনেক উপকারী। কাঁচা
শসার জুস স্ট্রং ও স্বাস্থ্যকর চুল গজাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন খোসাসহ একটি করে কচি
শসা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এক মাস পর দেখবেন আপনার মাথায় নতুন চুল উঁকি
দিচ্ছে।
Sign up here with your email